এবার পেমের টানে পাবনায় এসেছেন মালয়েশিয়ান এক তরুণী। রায়হান মণ্ডল নামে এক প্রবাসী বাংলাদেশি যুবককে ভালোবেসে তিনি বাংলাদেশে আসেন। নূর সাহিদা নামের ওই তরুণী ও রায়হান মণ্ডল গত রোববার (১৬ জুলাই) সকালে এক মাসের ভিসা নিয়ে মালয়েশিয়া থেকে পাবনায় আসেন। পরদিন সোমবার (১৭ জুলাই) তাদের বিবাহ হয়। জানা যায়, রায়হান মণ্ডল জেলার সুজানগর উপজেলার সাতবাড়িয়া ইউনিয়নে তারাবাড়িয়া নতুনপাড়া গ্রামের আব্দুস সামাদ মণ্ডলের ছেলে। আর নূর সাহিদা মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুর শহরের মোহাম্মদ চিমার উদ্দিনের মেয়ে।
এদিকে রায়হান মণ্ডলের পরিবারের সদস্যরা জানান, সংসারের অভাব-অনটন দূর করতে ২০১৬ সালে মালয়েশিয়াতে যান রায়হান মণ্ডল। সেখানে একটি ওয়ার্কশপে কাজ শুরু করেন। এরপর তিনি সেখানে একটি নিজস্ব কাপড়ের দোকান দেন। মালয়েশিয়া যাওয়ার কয়েক বছর পর নূর সাহিদার সঙ্গে রায়হান মণ্ডলের প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। গত ১৬ জুলাই এক মাসের ছুটি নিয়ে পাবনার গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে আসেন তারা।
রোববার সকালে প্রথমে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পরে সেখান থেকে পাবনার বাড়িতে আসেন। সোমবার বিকেলে স্থানীয় কাজীর মাধ্যমে এক লাখ টাকা দেনমোহরে বিবাহ সম্পন্ন হয় তাদের। পরিবারের আত্মীয়-স্বজন সবাই আনন্দ উৎসব করে তাদের বিয়ে দেন। গতকাল মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) বিকেলে রায়হান মণ্ডলের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, মালয়েশিয়ান তরুণী এলাকায় আসার খবরে বাড়িতে উৎসুক মানুষের ভিড়।
এ দম্পতিকে দেখতে পাড়া-প্রতিবেশীসহ আশপাশের এলাকার লোকজন আসছেন। এ সময় সবুজ হোসেন নামের এক প্রতিবেশী বলেন, মালয়েশিয়ান মেয়ে বলে কথা, তাও আবার আমাদের এলাকার এক যুবকের সঙ্গে ভালোবেসে চলে আসছেন। একনজর দেখতে শত শত মানুষ বাড়িতে ভিড় করছে। এজন্য আমরাও দেখতে আসছি। সুজানগর শহর থেকে আজিবর হোসেন নামে এক যুবক আসছেন সেই তরুণীকে দেখার জন্য। তিনি বলেন, আমরা কয়েকজন বন্ধু অটোরিকশা ভাড়া করে এদের দু'জনকে দেখতে আসছি। খুবই ভালো লাগছে।
রায়হান মণ্ডল বলেন, ৭ বছর আগে আমি পড়াশুনা ছেড়ে পরিবারের মুখে হাসি ফোটাতে মালয়েশিয়াতে কাজের জন্য যাই। মালয়েশিয়ায় থাকার সুবাদে কয়েক বছর পর পরিচয় হয় নুর সাহিদার সঙ্গে। পরিচয় থেকে প্রেম-ভালোবাসা। আমাদের দীর্ঘ প্রায় তিন বছরের সম্পর্ক। সে নিজেই সিদ্ধান্ত নিয়ে বাংলাদেশে এসেছে। পরবর্তীতে দুই পরিবারের সম্মতিতে এক লাখ টাকা দেনমোহরে আমাদের বিয়ে হয়।
একমাস পর আমরা দু'জনই আবার মালয়েশিয়ায় ফিরে যাবো। আমাদের জন্য সবাই দোয়া করবেন। আমরা যেন সুখে থাকতে পারি। এদিকে নুর সাহিদা বলেন, রায়হান আমাকে ভালোবাসে, আমিও রায়হানকে ভালোবাসি। পরিবারের সবার সম্মতিতে আমরা বিবাহ করেছি। আল্লাহ আমাদের এ বিবাহ কবুল করবেন ইনশাআল্লাহ। বাংলাদেশে আসার পরে দেখি এখানকার মানুষ খুব ভালো। আশা করি, এ বাড়ির মানুষও দারুণ হবে।
রায়হানের বোন চম্পা খাতুন বলেন, ১০ ভাইবোনের সবার ছোট রায়হান। ছোট বেলা থেকে তাকে আদর যত্ন করে মানুষ করেছি। বিদেশে গিয়ে সেখানকার একটি মেয়েকে বিবাহ করছে এটা আমাদের কাছে ভালো লাগছে। আমরা সবাই মিলে আনন্দ উৎসব করছি। রায়হানের মা অলিমা বেগম বলেন, মালয়েশিয়ান মেয়েকে বিয়ে করায় খুব খুশি হয়েছি। মেয়েটি সম্ভ্রান্ত মুসলিম বংশের মেয়ে জন্য আরও বেশি ভালো লাগছে। সবার সঙ্গে সে মিশে গেছে।